Breaking News
আপনি জানেন কি তাল আমাদের কি উপকার করে

আপনি জানেন কি তাল আমাদের কি উপকার করে?

তালগাছ সকলের পরিচিত। এর উচ্চতা ৩০-৬০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতার রং সবুজ, দেখতে বড় পাখার মত। পাতার সংখ্যা ৫০-৬০টি পর্যন্ত হয়। অন্যান্য গাছের তুলনায় তালের পাতা আকারে বড়। বৈশাখ মাসে বাবুই পাখি তালগাছের পাতায় বাসা বাঁধে যা দেখতে খুব চিত্তাকর্ষক। দেশের সর্বত্রই কম বেশি এ গাছ জন্মে। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম, বরেন্দ্র অঞ্চল, ভাওয়াল গড় ও লালমাই পাহাড়ী এলাকায় প্রচুর জন্মে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে এ গাছ জন্মে থাকে।

তালগাছ শাখাপ্রশাখাহীন একবীজ পত্রী উদ্ভিদ। এর বীজ সবচেয়ে বড়। সাধারণত ৬ প্রজাতির তাছগাছ দেখা যায়। স্ত্রী, পুরুষ উভয় গাছেই ফুল হয়। শুধুমাত্র স্ত্রী গাছেই ফল ধরে। ১২-১৩ বছর বয়স হলেই ফল আসে। কচি ফল সবুজ, পাকলে কমলা ও বেশি পাকলে লাল রঙের হয়ে থাকে। তাল কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই খাওয়া যায়। আষাঢ়, শ্রাবণ মাসে কাঁচা তাল প্রচুর পাওয়া যায়। কচি ফলের বীচি জেলির মত নরম ও বরফের মত স্বচ্ছ। কচি ফল সুস্বাদু ও মিষ্টি স্বাদের। এতে প্রচুর ভিটামিন এ ও সি থাকে। পরিপক্ক ফলের বীজে নারিকেলের মত শাস আছে। ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে পাকা তাল পাওয়া যায়। পাকা তালের রসের পিঠা, পায়েস, ক্ষীর খুব জনপ্রিয় খাবার।

তালগাছের কাণ্ড, বাকল, ফল ও পাতা অনেক উপকারী। তালের কাঠ খুব শক্ত, মজবুত ও টেকসই। ঘরের খুঁটি, আসবাবপত্র, বিভিন্ন গৃহস্থালী সামগ্রী ও নৌকা তৈরিতে তাল কাঠ অনন্য। বর্ষাকালে দেশের খাল-বিলে তালের নৌকা দেখা যায়। পাতা হতে পাতাপাখা, ঝুড়ি, মাদুর, ঘরের ছাউনি এবং বাকল হতে রশি, ব্রাশ তৈরি হয়। গরমের দিনে তাল পাতার পাখা খুব জনপ্রিয়। পুষ্পমঞ্জুরীর মাথা কেটে রস বের করা হয়। রস ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ। রস হতে মিছরি, গুড়, চিনি, ভিনেগার তৈরি হয়।লোকজ চিকিৎসায় তালের ব্যবহার প্রচুর। কচি গাছ পিত্তাধিক্য, আমাশয়, গনোরিয়া নিরাময় করে। শিকরের রসের মূত্রকারক, কৃমিনাশক গুণ আছে। শিকরের নির্যাস শ্বাসতন্ত্র ও বাকলের নির্যাস দাঁতের সমস্যায় উপকারী।

তাল মিছরি ঠা-া, সর্দি, মাথাব্যথা, হুপিং কাশি এবং পাকা তালের নির্যাস ত্বকেহ প্রদাহ কমায়। ঠান্ডা দুধ মিছরিসহ খেলে ভাল ঘুম হয়।তালগাছ যেমন উপকারী তেমন পরিবেশ বান্ধব। এ গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে, জমির উর্বরতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়।দেশের যত্রতত্র তালগাছ হয়ে থাকে। তবে পরিকল্পিত বাগান তৈরির কোন উদ্যোগ নেই। জমিজমার স্বল্পতা হেতু রাস্তার পাশে, কুকুর, লেক, ক্ষেতের আইলের ধারে প্রচুর গাছ রোপণ করা সম্ভব। তালগাছকে কেন্দ্র করে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ।

Check Also

সুস্থ থাকতে নিয়মিত খান কচি বাঁশ।

সুস্থ থাকতে নিয়মিত খান কচি বাঁশ।

প্রচলিত জনপ্রিয় ধারার একটি শব্দ বাঁশ। একে অপরকে ক্ষতি করার ক্ষেত্রে অথবা উপহাস করার ছলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!