উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকদেরকে পাঁচ (৫) ওয়াক্ত নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন মসজিদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক ও নিয়মিত মুসুল্লি অধ্যাপক মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন।
সেই ঘোষণার প্রতি সাড়া দিয়ে ৪০ দিন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং ৬০ দিন নিয়মিত ফজরের জামাত ও ২ দিন তাহাজ্জুত নামাজ পড়ে পুরষ্কার জিতে নিয়েছে কাপাসিয়ার ২০ কিশোর।
বৃহস্পতিবার (১২ আগষ্ট) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের মামরদী গ্রামের কৃতি সন্তান ও সালদৈ ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের নের্তৃত্বে মামরদী উত্তর পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কতিপয় ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা মিলে ব্যতিক্রমী এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
জানা যায় বেশ কিছুদিন আগে মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মসজিদে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ১০ থেকে ২০ বছর বয়সের কিশোররা যদি একটানা ৪০ দিন নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত এবং ৬০ দিন নিয়মিত ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করে,তাহলে তাদেরকে একটি করে বাইসাইকেল ও হাতঘড়ি পুরষ্কার হিসেবে প্রদাণ করা হবে।
আর সেই ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে এলাকার অনেক কিশোরই নামাজ আদায় শুরু করে। তবে ঘোষণায় উল্লেখিত নিয়মানুযায়ী নামাজ আদায় করেছে মাত্র ২০জন। তাদের মধ্যে কিশোর ৭ জন ও যুবক ১৩ জন। বৃহস্পতিবার বিকেলে মসজিদ প্রাঙ্গণে সকলের উপস্থিতিতে কিশোরদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে কিশোর ও যুবকদেরকে নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে মসজিদমুখী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এমন উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেনসহ মুসুল্লিদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানান গ্রামের স্কুল,কলেজ এবং মাদ্রাসার কিশোর ও যুবক ছাত্রদের মসজিদে এসে জামাতের সাথে নিয়মিত নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে ঘোষণার পর প্রায় ৩০ জনের মতো কিশোর ও যুবক নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করে। তারা ঠিকমতো নামাজ আদায় করছে কিনা তা হিসাব রাখার জন্য প্রতি ওয়াক্তে নামাজের পর হাজিরা নেওয়া হতো। যদি কেউ কোনো ওয়াক্তে অনুপস্থিত থাকতো তার গণনা বন্ধ করে দেওয়া হতো। এভাবে নিয়মিত যাচাই-বাছাই ও হাজিরার ভিত্তিতে সর্বশেষ কিশোর ও যুবক মিলে ২০ জন বিজয়ী হয়।
তিনি আরো বলেন, নিয়মিত নামাজ পড়–য়াদের মধ্যে পুরষ্কার দিতে গিয়ে এই আয়োজনে প্রবাসীসহ এলাকার এবং বন্ধু-বান্ধব যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞ। বিজয়ীদের সবাইকে ৬ হাজার ২০০ টাকা মূল্যের প্রিন্স বাইসাইকেল প্রদাণ করা হয়েছে এবং আমার বড় ভাই মাওলানা মোঃ মোফাজ্জল হোসেন বিজয়ী প্রত্যেককে ১টি করে হাতঘড়ি উপহার দিয়েছেন। যাতে করে সময় দেখে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে পারে। এদিকে ২০ সাইকেল কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
এদিকে বিষয়টি পুরো ইউনিয়ন ও উপজেলায় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন আরো উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এলাকার বয়স্কদের নিয়ে আগামীতে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পুরষ্কার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন-আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা অধ্যাপক মাওলানা মোঃ তোফাজ্জল হোসেন,মাওলানা আবুল হোসেন, কড়িহাতা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, আফসার উদ্দিন,আমজাদ হোসেনসহ প্রমুখ ব্যক্তিরা।