লঞ্চঘাটে হারিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ ১৯ বছর পরে মাকে খুঁজে পেয়েছেন বরগুনার হকার সোলায়মান। বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্যদের সহযোগিতায় গত মঙ্গলবার বিকেলে সোলায়মান ও তার মা আ’মেনা বেগমের যোগাযোগ ঘটে।
সংবাদপত্র বিক্রেতা হিসেবে বরগুনা শহরের পরিচিত মুখ সোলায়মান। কিন্তু ২৬ বছরের এই দরিদ্র তরুণের জীবনের গল্পটা ছিলো সবার অজানা। কোথায় তার বাড়ি, কোথায় তার বাবা-মা কিছুই জানতো না সোলায়মান।
আজ থেকে ১৯ বছর আগে স্বামীর নি’র্যাতনের শিকার হয়ে সাত বছরের ছোট্ট শি’শু সোলায়মানকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বরগুনা যাত্রা করেন অসহায় মা আ’মেনা। চাঁদপুর লঞ্চঘাট এসে মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে যান সোলায়মান। সেই থেকে শুরু হয় মা-ছে’লের বিচ্ছিন্ন জীবনের করুণ কাহিনি।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা সোলায়মানের এই করুণ কাহিনি জানতে পেরে গত ১৮ জুন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এরপর থেকে সোলায়মানের মাকে খুঁজে পেতে একযোগে কাজ করেন বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্যরা, সাহায্য করেন স্থানীয়রাও। ফেসবুকে সোলায়মানের ঘটনা জেনে পটুয়াখালী থেকে বরগুনা প্রেসক্লাবের সাথে যোগাযোগ করেন সোলায়মানেরই একজন খালাত ভাই মামুন।
এরপরের গল্পটা আরও আবেগঘন। সোলায়মানকে নিয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি জাফর হোসেন হাওলাদার, সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর মোটরসাইকেলযোগে সোলায়মানকে নিয়ে রওয়ানা হয়ে যান তার মাকে খুঁজতে প্রত্যন্ত গ্রাম আমড়াগাছিয়া গ্রামে। সোলায়মানের মা আ’মেনা বেগমের মামাত বোনের বাড়ি এটি।
এখানেই দীর্ঘ ১৯ বছর পর দুঃখিনী মা আ’মেনাকে খুঁজে পায় সোলায়মান। পুরো গ্রাম জুড়ে ততক্ষণে শুরু হয়েছে আবেগঘন পরিবেশ। মা-ছে’লের সাথে আনন্দাশ্রুতে একাকার হয়ে পড়ে পুরো এলাকাবাসী।
ওইদিন সন্ধ্যায় মাকে নিয়ে সোলায়মান ফিরে আসেন বরগুনায়। মা-ছে’লের এই করুণ কাহিনি শুনে শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমায় সোলায়মানের বাড়িতে।