প্রতিদিন আপনার ওজনে সামান্য ওঠানামা বেশ স্বাভাবিক। প্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রে ওজন গড়ে প্রতিদিন ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কিলো পর্যন্ত ওঠানামা করে। উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ, ডিহাইড্রেশন বা আপনার ঘুমের সময়সূচির মতো বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন এক সপ্তাহ বা এক মাসের মতো স্বল্প সময়ের মধ্যে আপনার ওজনে অনেকটা পরিবর্তন দেখতে পান তখন এর অর্থ অন্যরকম হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কেবল আপনাকে আকর্ষণীয় দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় নয় এটি বেশ কয়েকটি দীর্ঘস্থায়ী রোগকে উপশম করে তোলে। হাই বডি মাস ইনডেক্স হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, পিত্তে পাথর, শ্বাসকষ্ট এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্যান্সারের থেকে দূরে রাখতে পারে। সুতরাং, যদি আপনার ওজন কয়েক মাস বা বছর ধরে স্থিতিশীল থাকে এবং যদি তাতে হঠাৎ পরিবর্তন দেখতে পান, সেক্ষেত্রে কিছু কারণ দায়ী হতে পারে। এমনটাই প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ওষুধের প্রভাব
কিছু ওষুধের নিয়মিত সেবন আপনাকে সময়ের সাথে সাথে স্থুল করতে পারে। ওজন বাড়িয়ে তোলার দুটি প্রধান ওষুধ হলো হতাশা এবং হৃদরোগের ওষুধ। মাইগ্রেন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধও এক্ষেত্রে দায়ী হতে পারে। এই ওষুধগুলো সেবনের ফলে আপনার হরমোনে কিছু পরিবর্তন ঘটে যে কারণে ওজন বাড়তে পারে।
হাইপোথাইরয়েডিজম
আন্ডারঅ্যাক্টিভ থাইরয়েড বা হাইপোথাইরয়েডিজম আপনার ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। ঘাড়ের সামনের প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যখন পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয় তখন আপনি সমস্ত সময় দুর্বল, ক্লান্ত, ঠান্ডা অনুভব করতে শুরু করেন এমনকী ওজনও বেড়ে যেতে পারে। থাইরয়েড যখন স্বাভাবিক পরিসরের নিচের প্রান্তে কাজ করে তখন এটি আপনার ওজনে কয়েক কিলো যোগ করতে পারে।
অত্যধিক অ্যালকোহল গ্রহণ
আপনি যদি নিয়মিত অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকেন তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। কেবল মজাদার পানীয়ই নয় অ্যালকোহলে রয়েছে প্রচুর ক্যালোরি যা আমরা বেশিরভাগই বুঝতে পারি না। ১ ক্যান বিয়ারে ১৫৮ কিলোক্যালরি এবং আধা গ্লাস ওয়াইনে প্রায় ১৪০ কিলোক্যালরি রয়েছে। সুতরাং অ্যালকোহল নিয়মিত পান করলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
নির্দিষ্ট অসুখ
আপনি যদি পেরিমেনোপজ মেনোপজ বা পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিন্ড্রোম (পিসিওএস) এর মতো কিছু নির্দিষ্ট অসুখে ভুগে থাকেন তবে হরমোনের ভারসাম্যের পরিবর্তন হতে পারে। ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড, ব্রণ, এমনকি মুখের চুল বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধির মতো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কিছু উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এই অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করা যেতে পারে।
ঘুম এবং স্ট্রেস
স্ট্রেস প্রতিদিনের জীবনের একটি অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে নিদ্রাহীনতার সাথে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপও ওজন বাড়াতে পারে। আপনি কতটা স্বাস্থ্যকর খাচ্ছেন বা দিনে আপনি কতটা শরীরচর্চা করেন তা বিবেচনা না করেই কম ঘুমের অভ্যাস এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ বিএমআই এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে আপনার ওজন আরও বেড়ে যেতে পারে। ঘুমের অভাব আপনার ক্ষুধার হরমোন এবংঅতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়।
এইচএন/এএ/এমএস